About Us
About Us
আমাদের সম্পর্কে
দীনিয়াত বাংলাদেশ
সর্ব প্রথম ১৯২৫ ইং দক্ষিণ আফ্রিকার ওলামায়ে কেরামগণ সেখানের পরিস্থিতিকে সামনে রেখে মুসলিম স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি মাকতাব সিলেবাস তৈরী করেন। তাদের মাকতাব শিক্ষার সফলতা সম্পর্কে আমাদের ওলামায়ে কেরাম অবগত। তারই ধারাবাহিকতায় বড়দের পরামর্শক্রমে ভারতের মুম্বাই শহরে জনাব হাজী রফিক সাহেবের উদ্যোগে ২০০৩ ইং আফ্রিকার সিলেবাসসহ আরো অন্যান্য সিলেবাস সামনে রেখে ‘দীনিয়াত মুনাজ্জাম মাকতাব’ নামে একটি আদর্শ মাকতাব সিলেবাস প্রনয়ণ করা হয়। যার ভিত্তি ৪টি বিষয়ের উপর রাখা হয়। ১) আদর্শ সিলেবাস। ২) আদর্শ পাঠদান পদ্ধতি। ৩) আদর্শ নিতিমালা। ৪) আদর্শ পরিদর্শণ ব্যবস্থা। এ ৪টি বিষয়কে সামনে রেখে মুম্বাই থেকে ‘দীনিয়াত মুনাজ্জাম মাকতাবের’ কার্যক্রম ভারতবর্ষসহ পুুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু ইন্ডিয়াতেই দীনিয়াত সিলেবাসের মাধ্যমে প্রায় ৩০ লক্ষ স্কুলগ্রামী ছাত্র-ছাত্রী কুরআন শিক্ষার পাশা-পাশি মৌলিক দীন শিক্ষা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। বাংলাদেশেও সেই ‘মাকতাব’ শিক্ষা কার্যত্রম-কে বাস্তবায়নের লক্ষে ২০১১ থেকে সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে ‘দীনিয়াত মুনাজ্জাম মাকতাব’ পরিচালিত হয়ে আসছে। যার মাধ্যমে হাজারো স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রী ও জেনারেল শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষগণ দীনের মৌলিক জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। বাংলাদেশে মাকতাব শিক্ষাকে প্রচার-প্রসার করার লক্ষে ২০১৬ ইং মার্চে দীনিয়াত এর উদ্যোগে দক্ষিণ আফ্রিকার জমিয়তে উলামা শিক্ষা বোর্ড-এর প্রধান মাওলানা ইউনুস সাহেব আগমন করেন। এবং বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র হাটহাজারী মাদ্রাসাসহ দেশে প্রায় কেন্দ্রিয় পর্যায়ের ২২টি বড় প্রতিষ্ঠান সফর করেন। এর মাধ্যমে পুরো দেশে ‘দীনিয়াত মুনাজ্জাম মাকতাবের’ শিক্ষা কার্যক্রম ও প্রয়োজনীয়তা উলামাদের দৃষ্টিতে আসে।
- তার-ই সফলতা দেখার উদ্দেশ্যে ২০১৭ মার্চ মাসে বাংলাদেশের শীর্ষ উলামাদের একটি দল মুম্বাই সফর করেন। যা দেখে আসার পর উনারা অত্যন্ত আনন্দ এবং সন্তষ্ট প্রকাশ করেন। এবং অন্যদেরকে ‘দীনিয়াত মুনাজ্জাম মাকতাব’ প্রতিষ্ঠা করার প্রতি উৎসাহিত করেন। তাই আসুন! আমরা ‘দীনিয়াত মুনাজ্জাম মাকতাবের’ শিক্ষাকে সমাজের সর্বস্তরে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করি।
ভূমিকা
- ‘মাকতাব’ শিক্ষার মাধ্যমে মৌলিক দীন শিক্ষা ছিলো। এদেশের হাজার বছরের সার্বজনীন এক আদর্শ শিক্ষা ব্যবস্থা। একসময় এদেশের প্রতিটি মুসলিম শিশুদের শিক্ষার সূচনা ছিলো মসজিদ কেন্দ্রীক মাকতাব শিক্ষার মাধ্যমে। ফলে শৈশবে-ই প্রতিটি শিশুর অন্তর প্রজ্জলিত হতো আল-কোরআনের আলোয় আলোকিত। প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামী চেতনার শিক্ষা নিয়ে বেড়ে উঠতো প্রতিটি শিশু। তাই প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পরও তারা প্রতিটি ভালো কাজকে গ্রহণ করার জন্য উন্মুক্ত হয়ে থাকতো তাদের হৃদয়। মনের অজান্তেই বর্জন করতো প্রতিটি অন্যায়, অপরাধ ও কু-সংঙ্কার।
- মাকতাব শিক্ষার মাধ্যমে মুসলিম শিশুরা তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সহজে শিখে সে অনুযায়ী আমল করতে সক্ষম হতো। যেমন- ইমান- আকাইদ, উযূ-গোসল থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় মাসাইল জেনে আল্লাহর আদেশ-নিষেদ সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান অর্জন করতো। ফলে ইসলামী আদর্শের আদোলে গড়ে উঠতো প্রতিটি মুসলিম পরিবার ও সমাজ।
- কালের বিবর্তন ও আমাদের উদাসীনতার ফলে সার্বজনীন এ শিক্ষা ব্যবস্থা বর্তমান সময়ে প্রায় বিলুপ্তির পথে। যার ফলে সমাজ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ধর্মীয় চেতনা, ইসলামী মূল্য বোধ ও নৈতিকতা। নৈতিক অবক্ষয় ও অধঃপতনের কারণে বর্তমান সমাজ ঢেকে যাচ্ছে অপরাধ আর অসামাজিক কার্যক্রমের কালো ছায়ায়। বর্তমান বিশ্বে মুসলমানদের ইমান-আমল ধ্বংসের বহুমূখী ষরযন্ত্র। এমন অবস্থায় আমাদের মুসলিম সন্তানদের যদি কুরআন শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতা শিক্ষা না দেওয়া হয়, ভবিষ্যতে এ দেশে ইসলাম ও মুসলমানদের-কে এক ভয়াবহ পরিনতির সম্মুখিন করবে এবং আগামী প্রজন্মকে ধর্মীয় অনুভ‚তিশুণ্য, ইসলাম বিদ্বেষী হিসেবে গড়ে তুলবে।
- তাই বর্তমান বিশ্বের বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবীদগণ শতভাগ মুসলিম তথা সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত শিশু-কিশোর, যুবক-বয়ষ্ক এবং যেকোন শ্রেণি-পেশা বা বয়সের পুরুষ-মহিলা যেন দ্বীনের মৌলিক বিষয়সমূহ সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও সহীহ আকাইদ লালন করতে পারে, সেজন্য কাজ শুরু করেছেন। তারা সেই হাজার বছরের ‘মাকতাব’ শিক্ষা-কে যুগের চাহিদা অনুপাতে সংস্কার, আধুনিকায়ন, সুষ্ঠভাবে পরিচালনা ও বয়সভেদে ভিন্ন ভিন্ন সিলেবাসের মাধ্যমে সর্বশ্রেনীর মুসলমানদের কাছে দ্বীনের মৌলিক বিষয়সমূহ পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে তৈরী করেছেন ‘দীনিয়াত মুনাজ্জাম মাকতাব কোর্স’। দীনিয়াত কোর্সটি উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে সমাদৃত এবং প্রায় বিশটি ভাষায় অনুদিত। বর্তমান সময়ে মুসলমানদের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় ‘দীনিয়াত মুনাজ্জাম মাকতাব’ চালু করা সময়ের একান্ত দাবী।
প্রিয় দ্বীনি ভাই!
আপনার কাছে আমাদের আবেদন, সমাজের ৯৮% জনগোষ্ঠির কাছে মৌলিক দ্বীন পৌছানোর লক্ষ্যে দীনিয়াত মুনাজ্জাম মাকতাব প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসুন। এদেশের আগামী প্রজন্মকে নাস্তিকতা ও ধর্মদ্রোহীতার বিষাক্ত ছোবল থেকে রক্ষা করে তাদেরকে তাওহীদ, রিসালাত এবং ইসলামী চেতনা ও মূল্যবোধের শিক্ষাদানে সর্বাত্মক সহযোগীতা করে ঈমানী দায়িত্ব পালন করুন। আল্লাহ্ আমাদের সকলকে কুরআনের খেদমতের জন্য কবুল করুন। আমিন।